ব্যাঙ্কের ভঁাড়ারে টাকা অঢেল। অথচ বাজারে ধার নেওয়ার লোক নেই। করোনা–সঙ্কটের জেরে এমনই এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভারতীয় অর্থনীতিতে। দিশা খুঁজে পাচ্ছে না শিল্প–মহলও। বণিক সভা অ্যাসোচ্যাম–এর আশা, আগস্টের গোড়ার বৈঠকে এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর উপায় নিয়ে মাথা ঘামাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানিটরি কমিটি। ৪ থেকে ৬ আগস্ট বৈঠকের পর আর্থিক নীতি নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে ওই কমিটি। অ্যাসোচ্যাম–এর মতে, বাজারে চলছে অনিশ্চয়তা। কারণ লোকের হাতে টাকা নেই। তাই জিনিসের চাহিদাও নেই। এর পর ব্যালান্স শিটে বাড়ছে ঋণের বোঝা। ফলে কী জন্য ধার নেবে শিল্প–কারখানা? এর ফলে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে জমা–হওয়া টাকা এসে জড়ো হচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভঁাড়ারে। আবার সেই টাকা বিনিয়োগের জায়গা খুঁজে না পেয়ে সরকারকেই বেশি–বেশি করে ঋণ দিয়ে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। চলতি অর্থ বর্ষে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এ দেশের শিল্পক্ষেত্রে মোট ব্যাঙ্ক–ঋণের পরিমাণ কমেছে ১.৫ শতাংশ। আরবিআই–এর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সার শিল্পে মোট ব্যাঙ্ক–ঋণের পরিমাণ কমেছে ২৯ শতাংশ, রাসায়নিক ও রাসায়নিক পণ্য তৈরির শিল্পে মোট ঋণ কমেছে মাইনাস ১০ শতাংশ, কাচ ও কাচের জিনিসপত্র তৈরির শিল্পে মোট ঋণ কমেছে ৭ শতাংশ। একই ভাবে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমেছে নির্মাণ শিল্পে ৩.৭ শতাংশ, রত্ন ও অলঙ্কার শিল্পেও ৩.৭ শতাংশ এবং চর্মশিল্পে ৪.৪ শতাংশ। অ্যাসোচ্যাম–এর সেক্রেটারি জেনারেল দীপক সুদ জানিয়েছেন, ‘ঋণ পাওয়া নয়, আজকের দিনে মূল সমস্যা হল ধার শোধ করা। দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্পের যত উৎপাদন–ক্ষমতা, বাস্তবে কাজে লাগানো হচ্ছে তার অর্ধেকেরও কম। এর পরেও যদি তাদের ব্যালান্স শিটে চাপ পড়ে, তা হলে তার পরিণাম হবে খুবই খারাপ।’ তঁার মতে, সমস্যাটা রেপো রেট নিয়ে নয়। আর্থিক বাজারে যেটা সমস্যা তৈরি করছে, তা হল রিভার্স রেপো রেট। রিভার্স রেপো রেটে সুদের যে–হার, সেই হারেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে টাকা জমা রাখে ব্যাঙ্কগুলি। দীপক সুদ বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানিটরি কমিটি যদি তাদের বৈঠকে সরকারের বাড়তি ঋণের চাহিদা জোগান দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলেও ব্যাঙ্ক–ব্যবস্থায় থেকে যাবে নগদের স্রোত, যা ধার নেওয়ার লোক বাজারে নেই। অ্যাসোচ্যামের বক্তব্য, কর্পোরেট ও ইনফর্মাল সেক্টর, অর্থনীতির দুটো ক্ষেত্রই এখন আগুন নেভানো বা ক্ষতি সামলানোর মনোভাব নিয়ে চলছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তারা নতুন বিনিয়োগ এড়িয়েই চলবে। এই পরিস্থিতিতে বণিক সভার আশা, নিশ্চয়ই এই কঠিন অবস্থা থেকে বেরোনোর রাস্তা দেখাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।ব্যাঙ্ক টাকা ধার দিতে চাইছে, কিন্তু জনগন নিচ্ছেনা
July 31, 2020
Tags:
Bank
ব্যাঙ্কের ভঁাড়ারে টাকা অঢেল। অথচ বাজারে ধার নেওয়ার লোক নেই। করোনা–সঙ্কটের জেরে এমনই এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভারতীয় অর্থনীতিতে। দিশা খুঁজে পাচ্ছে না শিল্প–মহলও। বণিক সভা অ্যাসোচ্যাম–এর আশা, আগস্টের গোড়ার বৈঠকে এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর উপায় নিয়ে মাথা ঘামাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানিটরি কমিটি। ৪ থেকে ৬ আগস্ট বৈঠকের পর আর্থিক নীতি নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে ওই কমিটি। অ্যাসোচ্যাম–এর মতে, বাজারে চলছে অনিশ্চয়তা। কারণ লোকের হাতে টাকা নেই। তাই জিনিসের চাহিদাও নেই। এর পর ব্যালান্স শিটে বাড়ছে ঋণের বোঝা। ফলে কী জন্য ধার নেবে শিল্প–কারখানা? এর ফলে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে জমা–হওয়া টাকা এসে জড়ো হচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভঁাড়ারে। আবার সেই টাকা বিনিয়োগের জায়গা খুঁজে না পেয়ে সরকারকেই বেশি–বেশি করে ঋণ দিয়ে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। চলতি অর্থ বর্ষে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এ দেশের শিল্পক্ষেত্রে মোট ব্যাঙ্ক–ঋণের পরিমাণ কমেছে ১.৫ শতাংশ। আরবিআই–এর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সার শিল্পে মোট ব্যাঙ্ক–ঋণের পরিমাণ কমেছে ২৯ শতাংশ, রাসায়নিক ও রাসায়নিক পণ্য তৈরির শিল্পে মোট ঋণ কমেছে মাইনাস ১০ শতাংশ, কাচ ও কাচের জিনিসপত্র তৈরির শিল্পে মোট ঋণ কমেছে ৭ শতাংশ। একই ভাবে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমেছে নির্মাণ শিল্পে ৩.৭ শতাংশ, রত্ন ও অলঙ্কার শিল্পেও ৩.৭ শতাংশ এবং চর্মশিল্পে ৪.৪ শতাংশ। অ্যাসোচ্যাম–এর সেক্রেটারি জেনারেল দীপক সুদ জানিয়েছেন, ‘ঋণ পাওয়া নয়, আজকের দিনে মূল সমস্যা হল ধার শোধ করা। দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্পের যত উৎপাদন–ক্ষমতা, বাস্তবে কাজে লাগানো হচ্ছে তার অর্ধেকেরও কম। এর পরেও যদি তাদের ব্যালান্স শিটে চাপ পড়ে, তা হলে তার পরিণাম হবে খুবই খারাপ।’ তঁার মতে, সমস্যাটা রেপো রেট নিয়ে নয়। আর্থিক বাজারে যেটা সমস্যা তৈরি করছে, তা হল রিভার্স রেপো রেট। রিভার্স রেপো রেটে সুদের যে–হার, সেই হারেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে টাকা জমা রাখে ব্যাঙ্কগুলি। দীপক সুদ বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানিটরি কমিটি যদি তাদের বৈঠকে সরকারের বাড়তি ঋণের চাহিদা জোগান দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলেও ব্যাঙ্ক–ব্যবস্থায় থেকে যাবে নগদের স্রোত, যা ধার নেওয়ার লোক বাজারে নেই। অ্যাসোচ্যামের বক্তব্য, কর্পোরেট ও ইনফর্মাল সেক্টর, অর্থনীতির দুটো ক্ষেত্রই এখন আগুন নেভানো বা ক্ষতি সামলানোর মনোভাব নিয়ে চলছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তারা নতুন বিনিয়োগ এড়িয়েই চলবে। এই পরিস্থিতিতে বণিক সভার আশা, নিশ্চয়ই এই কঠিন অবস্থা থেকে বেরোনোর রাস্তা দেখাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।