করোনায় মৃত্যু হলো সেনকো গোল্ডের মালিক শঙ্কর সেন এর

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল সেনকো গোল্ডের কর্ণধার শঙ্কর সেনের। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। করোনায় আক্রান্ত হয়ে টানা দশদিন তিনি ভরতি ছিলেন হাসপাতালে। জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মঙ্গলবার সকালে হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। তারপরই মৃত্যু হয় তাঁর।


বাঙালি শিল্পোদ্যোগী হিসেবেই শুধু নন, শঙ্কর সেন সারা ভারতের গয়নাশিল্পে ছিলেন পরিচিত মুখ। নয়ের দশকে বাবার তিনটি ছোট সোনার দোকান থেকে ব্যবসার হাল ধরেছিলেন শঙ্কর সেন। সেখান থেকে সেনকো গোল্ডের বাৎসরিক টার্নওভার এখন আকাশছোঁয়া। দেশের একশোটিরও বেশি ব্রাঞ্চ রয়েছে সেনকো গোল্ডের। সারা দেশের ১৪টি রাজ্যে বিস্তৃত সেনকোর ব্যবসা। সংস্থার প্রধান মানুষটাই এভাবে আকস্মিক চলে যাওয়ায় বিপর্যস্ত সেনকো গোল্ডের কর্মীরা। দেশের স্বর্ণ ব্যবসায় শঙ্কর সেনের ক্ষুরধার মস্তিষ্কের প্রশংসা করতেন অনেক বড় শিল্পপতিরাও। সেই তিনিই বিদায় নিলেন মারণ ভাইরাসের কারণে।
করোনা মহামারীর বিরুদ্ধেও শঙ্কর সেনের নেতৃত্বে লড়াইয়ে সামিল হয়েছিল সেনকো গোল্ড। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের সম্মানিত করেছিল সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস। মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডাক্তার, নার্সদের অবদানকে কুর্নিশ জানাতেই তাঁদের সম্মানিত করেছিল সেনকো।
চলতি মাসেই এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল ওই অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রাজ্যের করোনা হাসপাতালগুলিতে যে সমস্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা অবিরত কাজ করে চলেছেন, তাঁদের প্রশংসা করা হয়। অনুষ্ঠানে সেনকো গোল্ড এবং ডায়মন্ডসের তরফে করোনাযোদ্ধাদের হাতে বিশেষ নকশা করা রুপোর মুদ্রা তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই পরিকল্পনাও ছিল শঙ্কর সেনের।
সম্প্রতি আরেক বাঙালি শিল্পোদ্যোগী অর্ণব বসুও প্রয়াত হয়েছেন। তবে তিনি করোনায় নয়, মারা যান ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে। অর্ণব বাবু রাজ্যের জনপ্রিয় কেক-পেস্ট্রির রিটেল চেন, মিও আমোরের ( mio amore) কর্ণধার ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। বেশ কিছুদিন যাবৎ ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। গত ৩ জুলাই তিনি শেষনিঃস্বাস ত্যাগ করেন।
এবার করোনা কে়ড়ে নিল সেনকো কর্ণধারের প্রাণ। স্বাভাবিক কারণেই শোকের ছায়া রাজ্যের শিল্প মহলে। শোকে আচ্ছন্ন সংস্থার অগণিত কর্মী-সদস্যরা।
Previous Post
Next Post
Related Posts