রাজ্যে সবাইকে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন, তপনের সভা থেকে ঘোষণা মমতার

রাজ্যের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের বিনা পয়সায় টিকা দেওয়ার ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের সভা থেকে আজ বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেন তিনি। একই সঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকার দাম ঘোষণার পর দিনই নরেন্দ্র মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণে নামলেন তৃণমূল নেত্রী। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, “বিজেপি মুখে বলবে এক দেশ এক নীতি, আর টিকার বেলায় কেন্দ্র, রাজ্য, বেসরকারি ভাগাভাগি করবে!” জাতি-ধর্ম-বয়স নির্বিশেষে সবাইকে একই দামে টিকা দেওয়ার দাবি করেন মমতা। তবে রাজ্যের মানুষকে বিনা পয়সায় টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মমতা। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে সংক্ষিপ্ত নির্বাচনী জনসভায় করোনা নিয়ে মোদি সরকারকে কার্যত তুলোধোনা করেন তিনি।
গতকাল বুধবারই সেরাম ইনস্টিটিউটের তরফে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারগুলিকে কোভিশিল্ডের প্রতিটি ডোজ ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজের দাম ধার্য করা হয়েছে ৬০০ টাকা। যদিও কেন্দ্র প্রতি ডোজ পাবে মাত্র ১৫০ টাকায়। সেরামের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আগামী দু’মাস আমাদের উৎপাদনের ৫০ শতাংশ টিকা কেন্দ্র সরকারকে দেওয়া হবে। আর বাকি ৫০ শতাংশ রাজ্য ও বেসরকারি হাসপাতালগুলি পাবে।”

এই ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করলেন মমতা। এই নীতির জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে মোদি সরকারকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, “দিল্লি যদি ৬ মাস আগে থেকে টিকা দিত তাহলে আর কারও করোনা হত না। আমি নরেন্দ্র মোদিকে বললাম আমাকে ভ্যাকসিন দিন আমি বিনা পয়সায় সবাইকে দেব। এখন বলছেন ভ্যাকসিন নিজেরা জোগাড় করে নিন। কোথা থেকে পাব? আগেই তো সব টিকা বিদেশে পাঠিয়ে দেয়েছেন?” “এই করোনা পরিস্থিতির জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদিই”, কটাক্ষ মমতার। সেই সঙ্গে মমতা পিএম কেয়ারের টাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, “পিএম কেয়ারের টাকা দিয়েই দেশের মানুষকে বিনা পয়সায় টিকা দেওয়া যেত। কোথায় গেল সেই টাকা?” সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্য করোনা নিয়ে কী কী প্রস্তুতি নিয়েছে। এবং কী করতে চলেছে।

সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গে আরও একবার দুঃখ প্রকাশ করেন মমতা। রাজ্য সেই সঙ্গে সবাইকে সতর্ক থেকে মাস্ক পরে ভোট দিতে বলেন। কারণ ভোট না দিলে ভোটার তালিকা থাকে নাম বাদ দিয়ে দেবে বিজেপি। এনআরসি, এনপিআর করার সুযোগ পেয়ে যাবে। কিন্তু তৃণমূল যে কোনও মূল্যে এনআরসির বিরোধিতা করবে বলে আরও একবার জানিয়ে দেন তিনি।

আগামীকাল কি বাংলায় নরেন্দ্র মোদি আসছেন?

আগামিকাল, শুক্রবার বাংলায় ৪টি সভা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। তবে রাজ্যে আসছেন না নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। কোভিড নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে থাকবেন বলে এই সিদ্ধান্ত।

রাজ্যে শেষ দু'দফার ভোটের আগে ২৬ ও ২৯ এপ্রিল- দুদিনই জোড়া সভা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর (PM Modi)। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে একই দিনে ৪টি সভা করার কথা স্থির হয়। ২৩ এপ্রিল সভাগুলি হওয়ার কথা মালদহ, বহরমপুর, সিউড়ি ও দক্ষিণ কলকাতায়। কিন্তু আগামিকাল, শুক্রবার রাজ্যে আসছেন না মোদী (Narendra Modi)। তিনি টুইট করেছেন, ''কোভিড পরিস্থিতির পর্যালোচনায় আগামিকাল উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে থাকব। সে কারণে পশ্চিমবঙ্গে যাব না।'' এই সভাগুলি একেবারে বাতিল নাকি ২ দফার আগে রাজ্যে আসবেন মোদী, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ছোট সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি (BJP)। মোদীর (Narendra Modi) ৪টি সভাতেই লোকসংখ্যা ৫০০-র মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। বিজেপি (BJP) প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল,'পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ চলছে। সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়া জরুরি। তা মাথায় রেখে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda) সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় নেতারা ছোট সভা করবেন। ৫০০ র বেশি ব্যক্তি থাকবেন না সভায়। কোভিডবিধি মেনে সভা হবে।'

অ্যাম্বুল্যান্স থেকে হাসপাতালে ভর্তি, করোনা মোকাবিলায় জরুরি নম্বর প্রকাশ রাজ্যেরসবিস্তার